মুদ্রানীতি ঘোষণা আজ – নীতি সুদহার বাড়তে পারে

বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকছবি: সংগৃহীত

নানা সংকটে দেশের অর্থনীতি। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এর আগে এমন বহুমুখী সমস্যা দেখা যায়নি। এখনকার সংকটের মধ্যে অন্যতম হলো চাহিদার তুলনায় ডলারের জোগান কম। এতে অনেক ব্যবসায়ীই বিপাকে পড়েছেন। আবার ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়ছে দ্রব্যমূল্যে। এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১০ শতাংশ ছুঁই ছুঁই করছে। শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতিসহ সাধারণ আমদানিও কমে গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করতে থাকায় গত এক বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত প্রায় ১৩ বিলিয়ন, মানে ১ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার কমেছে।

ব্যাংকঋণের সুদহার ৯ শতাংশে আটকে রাখায় আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। ব্যাংকে যে আমানত আসছে, তার চেয়ে ঋণ বেশি যাচ্ছে। পাশাপাশি ইসলামি ধারার কয়েকটি ব্যাংক ভুগছে তীব্র তারল্যসংকটে। সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণও বাড়ছে দিন দিন। এসব সমস্যা মোকাবিলায় নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন।

অর্থনীতির এমন অস্থির সময়ে আজ রোববার আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এর মাধ্যমে ব্যাংকঋণের সুদের হার কতটা বাড়বে এবং ডলার-সংকট কাটাতেই বা কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা জানা যাবে। সেই সঙ্গে চলতি হিসাবের পাশাপাশি আর্থিক হিসাবেও যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তার উন্নতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী করবে, সেটিও জানা যাবে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ দেশের জিডিপির ২৭ শতাংশ। প্রতিবেশী ভারতের আমদানি-রপ্তানি দেশটির জিডিপির ৪৫ শতাংশ। ভারত ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতি প্রায় ৪০ শতাংশ কমিয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৩ সালের এপ্রিলের মধ্যে থাইল্যান্ডের মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমে ২ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। অথচ বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ উঠেছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ ও ডলারের দাম ১০৪ টাকায় নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি ও ডলারের সংকট, এই দুই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের।

বাজারে মুদ্রা সরবরাহবিষয়ক নীতিই হলো মুদ্রানীতি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ যে মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি দিয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক তার মুদ্রানীতিতে মুদ্রা নিয়ন্ত্রণভিত্তিক ব্যবস্থা থেকে সরে এসে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণভিত্তিক ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে।

ভারত ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতি প্রায় ৪০ শতাংশ কমিয়ে ৪.২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। থাইল্যান্ডেও মূল্যস্ফীতি ৭.৭ শতাংশ থেকে কমে ২.৭ শতাংশে নেমে এসেছে। অথচ বাংলাদেশে তা বেড়ে ৯.৯৪ শতাংশে উঠেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, যে ধরনের মুদ্রানীতি নেওয়া দরকার, তা এখন নেওয়া যাচ্ছে না। অন্য দেশগুলো যেভাবে মূল্যস্ফীতি কমাচ্ছে, তা বাংলাদেশ পারছে না। কারণ, এখানকার ব্যাংকসহ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই দুর্বল। আর্থিক খাতের সব তথ্য-উপাত্তও বিশ্বাসযোগ্য নয়।

মুদ্রানীতিতে যা থাকছে

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুন মুদ্রানীতিটি হবে সংকোচনমূলক। এর অংশ হিসেবে টাকাকে আরও দামি করে তুলতে নীতি সুদহার বাড়ানো হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে নীতি সুদহার ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদহারের করিডর প্রথা চালু করবে। এ জন্য স্পেশাল রেপো ও রিভার্স রেপোর সুদহারের মধ্যে করিডর হবে। মাঝে থাকবে রেপো সুদহার। স্পেশাল রেপোকে বলা হবে স্ট্যান্ডার্ড লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ), রেপোকে বলা হবে নীতি সুদ ও রিভার্স রোপোকে বলা হবে স্ট্যান্ডার্ড ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ)। মুদ্রানীতিতে এসব সুদহার বাড়ানোর ঘোষণা থাকবে, যা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করবে। এখন রেপো সুদহার ৬ শতাংশ, স্পেশাল রেপোর সুদহার ৯ শতাংশ ও রিভার্স রেপো ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ।

এ ব্যবস্থায় রেপোর সুদহার কলমানির সুদের সঙ্গে ওঠানামা করবে। উল্লেখ্য, এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকের কাছ থেকে যে সুদে টাকা ধার নেয়, সেটাই কলমানির সুদ। দেশে কলমানির সুদের হার বাজারভিত্তিক হলেও সেটাকে ৭ শতাংশের ওপরে উঠতে দেয় না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদহারের নামকরণ করা হবে স্মার্ট লেন্ডিং রিফর্ম রেট। বর্তমানে এই সুদের হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। নতুন সুদহার নির্ধারণ করা হবে ৬ মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহারের সঙ্গে মার্জিন যুক্ত করে। সর্বশেষ ৬ মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ছিল ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। এর সঙ্গে আড়াই থেকে সাড়ে ৩ শতাংশ মার্জিন যুক্ত হতে পারে।

পাশাপাশি আইএমএফের শর্ত মেনে মুদ্রানীতিতে বিনিয়োগ ও দায়কে বাদ দিয়ে প্রকৃত রিজার্ভের গণনা শুরু ও মুদ্রা সরবরাহের প্রধান সূচকের কর্মসূচির পরিবর্তে প্রক্ষেপণের ঘোষণা থাকবে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংকগুলোকে সুদহার নির্ধারণের স্বাধীনতা দিতে হবে। ডলারের দামও করে দিতে হবে বাজারভিত্তিক। রাজস্ব নীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে ও বাজারে তদারকি জোরদার করে মূল্যস্ফীতি কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। এ ছাড়া আর্থিক খাতে খেলাপি ঋণ ও ইচ্ছাকৃত খেলাপি কমাতে মুদ্রানীতিতে লক্ষ্য বেঁধে দেওয়ার সময় এসেছে।

সূত্রঃ প্রথম আলো।

Facebook
LinkedIn
Shopping Basket

Capital Market Risk Assessment Survey

Iram Hoque

Mohd. Iramul Hoque (Iram) completed his bachelor’s degree in Industrial Engineering in 2018 from Purdue University.

He joined Deloitte Consulting LLP as a Consulting Analyst based out of New York City having previously worked in similar roles at PricewaterhouseCoopers LLP & Landis+Gyr.

Iram left consulting and returned to Bangladesh to take up the family business. Realizing the opportunity in the capital market in Bangladesh, Iram worked relentlessly to found Columbia Shares & Securities Ltd in 2021.

Md Saiful Hoque

Md. Saiful Hoque received his bachelor’s degree in Civil Engineering from Columbia University in 1986 followed by a master’s degree from Texas A&M University in 1988. Upon completion of his Graduate Degree, he joined Gulf Interstate Engineering Company in Houston, USA serving as a Project Engineer.

He returned to Bangladesh in 1992 to join Columbia Enterprise Ltd., the family business of Shipping and Freight Forwarding services. In addition, he has built flourishing businesses manufacturing Garment’s Accessories and Fast-Moving Consumer Goods.