
গতকাল রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতিসংক্রান্ত এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ সময় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যাংকাররা জানান, ব্যাংকগুলো অনেক দিন ধরেই সুদহারের সীমা তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। কেননা ঋণে ৯ শতাংশ সুদের সীমা থাকায় আমানতে সুদ বাড়াতে পারছে না ব্যাংকগুলো। আবার সুদ না বাড়িয়েও ঋণ পাচ্ছে না। আইএমএফের সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত সুদহার বাজারভিত্তিক করা। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনেও সুদহারের সীমা প্রত্যাহার অথবা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, নতুন মুদ্রানীতি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। আগামী জুনের তৃতীয় সপ্তাহে মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। চলমান মুদ্রানীতির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও আগামী মুদ্রানীতিতে কী কী থাকবে, বৈঠকে সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দুই বছর মেয়াদি বন্ডে ৭.৫৫ শতাংশ, পাঁচ বছর মেয়াদি বন্ডে ৭.৯০ শতাংশ, ১০ বছর মেয়াদি বন্ডে ৮.৩৩ শতাংশ, ১৫ বছর মেয়াদি বন্ডে ৮.৭৭ শতাংশ ও ২০ বছর মেয়াদি বন্ডে সুদের হার ৮.৯৫ শতাংশ। অর্থাত্ এই পাঁচ ধরনের বন্ডে সুদহারের গড় ৮.৩০ শতাংশ। এই রেটের সঙ্গে যদি বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ শতাংশ করিডর রেট নির্ধারণ করে দেয়, তাহলে ১৩.৩০ শতাংশে ঋণ বিতরণের সুযোগ পাবে ব্যাংক। অর্থাৎ এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে ব্যাংকঋণের সর্বনিম্ন সুদহার এক লাফে ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আইএমএফের ঋণ পাওয়ার শর্ত পূরণ করতেই এ সিদ্ধান্তের কথা ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক।