নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই, তাদেরকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর কাছে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করার পরিকল্পনা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যথায় এসব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে ন্যুনতম ২ জন করে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা হবে। এছাড়াও, কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে হুশিয়ারি দিয়েছে বিএসইসি।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেছেন, যেসব কোম্পানি সম্মিলিত শেয়ার ন্যুনতম ৩০ শতাংশ ধারণ করতে ব্যর্থ হবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে বিএসইসি।
বিএসইসি’র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ি, জুলাই ২০২০ সালে ৪৪টি কোম্পানিতে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার ৩০ শতাংশের কম ছিল। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৯টিতে। অর্থাৎ এই সময়ে ১৫টি কোম্পানি বিএসইসির নির্দেশনা মেনে সম্মিলিত শেয়ার ৩০ শতাংশ পূরণ করেছে।
এদিকে, সম্মিলিত শেয়ার ৩০ শতাংশ ধারণ করার খবরে মঙ্গলবার (০৫ সেপ্টেম্বর) ৮টি কোম্পানির শেয়ারে চাঙ্গাভাব দেখা গেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ দরে লেনদেন করে হল্টেড হতে দেখা গেছে ৩টি কোম্পানির শেয়ার। বাকিগুলোর শেয়ারদর ঊর্ধ্বগামী ছিল।
কোম্পানিগুলো হলো-আজিজ পাইপ, আইএসএন, ইসলামী ইন্সুরেন্স, সেন্ট্রাল ফার্মা, সিএনএ টেক্সটাইল, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজ ও নর্দার্ন জুট লিমিটেড। এর মধ্যে আজিজ পাইপ, আইএসএন ও ইসলামী ইন্সুরেন্সের শেয়ার সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়েছে।
আজিজ পাইপ
‘বি’ ক্যাটাগরির আজিজ পাইপের মোট শেয়ার ৫৩ লাখ ৪৭ হাজার ১২৫টি। কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ার রয়েছে ১৩.১১ শতাংশ। ৩০ শতাংশ শেয়ার পূরণ করতে কোম্পানিটির ১৬.৮৯ শতাংশ বা ৯ লাখের বেশি শেয়ার প্রয়োজন।
আইএসএন
‘বি’ ক্যাটাগরির আইএসএনের মোট শেয়ার ১ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার ৩টি। কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ার রয়েছে ২১.৬২ শতাংশ। ৩০ শতাংশ শেয়ার পূরণ করতে কোম্পানিটির ৮.৩৮ শতাংশ বা ৯ লাখ ১৫ হাজারের বেশি শেয়ার প্রয়োজন।
ইসলামী ইন্সুরেন্স
‘এ’ ক্যাটাগরিরইসলামী ইন্সুরেন্সের মোট শেয়ার ৪ কোটি ১১ লাখ ৬৫ হাজার ২১৫টি। কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ার রয়েছে ২৭.১৬ শতাংশ। ৩০ শতাংশ শেয়ার পূরণ করতে কোম্পানিটির ২.৮৪ শতাংশ বা ১১ লাখ ৬৯ হাজারের বেশি শেয়ার প্রয়োজন।
সেন্ট্রাল ফার্মা
‘বি’ ক্যাটাগরির সেন্ট্রাল ফার্মার মোট শেয়ার ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪৪টি। কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ার রয়েছে ২৫.৮৯ শতাংশ। ৩০ শতাংশ শেয়ার পূরণ করতে কোম্পানিটির ৪.১১ শতাংশ বা ৪৯ লাখ ২৪ হাজার শেয়ার প্রয়োজন।
সিএনএ টেক্সটাইল
‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে ‘বি’ ক্যাটাগারির প্রক্রিয়ায় থাকা সিএনএ টেক্সটাইলের মোট শেয়ার ২৩ কোটি ৯৩ লাখ ১৬ হাজার। কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ার রয়েছে ২২.১৪ শতাংশ। ৩০ শতাংশ শেয়ার পূরণ করতে কোম্পানিটির ৭.৮৬ শতাংশ বা ১ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার শেয়ার প্রয়োজন।
অলিম্পিক এক্সেসরিজ
‘বি’ ক্যাটাগরির অলিম্পিক এক্সেসরিজের মোট শেয়ার ১৬ কোটি ৯৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৮২টি। কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ার রয়েছে ২৫.৮১ শতাংশ। ৩০ শতাংশ শেয়ার পূরণ করতে কোম্পানিটির ৭.৮৬ শতাংশ বা ১ কোটি ৩৩ লাখ ২৫ হাজার শেয়ার প্রয়োজন।
সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজ
‘জেড’ ক্যাটাগরির সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজের মোট শেয়ার ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫০টি। কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ার রয়েছে ১২.০১ শতাংশ। ৩০ শতাংশ শেয়ার পূরণ করতে কোম্পানিটির ১৭.৯৯ শতাংশ বা ১ কোটি ৩ লাখ ২০ হাজারের বেশি শেয়ার প্রয়োজন।
নর্দার্ন জুট
‘জেড’ ক্যাটাগরির নর্দার্ন জুটের মোট শেয়ার ২১ লাখ ৪২ হাজার। কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ার রয়েছে ১৫.০৯ শতাংশ। ৩০ শতাংশ শেয়ার পূরণ করতে কোম্পানিটির ১৪.৯১ শতাংশ বা ৩ লাখ ১৯ হাজারের বেশি শেয়ার প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, কোম্পানিগুলোর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত আজিজ পাইপ, সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজ ও নর্দার্ন জুটের উৎপাদন বন্ধ।
সূত্রঃ শেয়ারনিউজ