![বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে যেকোন পলিসি তৈরি করতে হবে: ডিএসই চেয়ারম্যান](https://www.sharenews24.com/article_images/2024/05/13/DSE-chairman-CEO.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেছেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে যেকোন পলিসি তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, স্বার্থ সংরক্ষণ মানে এই নয় যে, মার্কেটকে উন্মুক্ত করে দেয়া। এটা হলো মার্কেটকে সিকিউর করা। আবার সিকিউর করতে গিয়ে যেন ভালো বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
আজ সোমবার (১৩ মে) নিকুঞ্জে ডিএসইর নিজস্ব কার্যালয়ে সিইও ফোরামের সঙ্গে আয়োজিত এক বৈঠকে তিনি এই কথা বলেন। সিইও ফোরামের প্রেসিডেন্ট মোঃ ছায়েদুর রহমান ও সংগঠনটির ৩০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের পাশাপাশি ডিএসই’র প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সাত্বিক আহমেদ শাহ, প্রধান রেগুলেটরী কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, বহুজাতিক কোম্পানি, ভালো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি, আরএমজি সেক্টরের গ্রীন ফ্যাক্টরি কোম্পানিগুলো ও ইন্স্যুরেন্স খাতসহ অনেক ভালো খাত রয়েছে, যাদের বাজার আনার জন্য সুযোগ রয়েছে। শুধু ভালো কোম্পানিকে বাজারে আনতে একটি রিসার্স সেল তৈরি করে কাজ করতে হবে।
ড. হাসান বাবু বলেন, শেয়ারবাজার ক্রান্তিকাল পেরিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেজন্য বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মিলে একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেয়ারবাজারের মাধ্যমে অর্থনীতিকে গতিশীল করতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকাভুক্তির জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন৷ প্রধানমন্ত্রীর এই দূরদর্শী নির্দেশনা শেয়ারবাজারের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক ও সময়োপযোগী৷ প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ স্টক এক্সচেঞ্জের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য ছিল৷ প্রধানমন্ত্রী শেয়ারবাজারের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক বিধায় তার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকারি লাভজনক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলেছেন।
ডিএসই চেয়ারম্যান জানান, প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন সে বিষয়ে আমরা সম্মিলিতভাবে কিভাবে কাজে লাগাতে পারি সে বিষয়ে আজকে সিইও ফোরামের সাথে বৈঠক। পর্যায়ক্রমে আমরা মার্কেট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন, ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনায় বসবো। যা শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে৷ এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে৷ আমাদের সকলের উদ্দেশ্য হলো শেয়ারবাজারকে একটি ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। আমরা সকলে এক সাথে কাজ করবো। যা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বাজেটে ট্যাক্স প্রসংগে তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে অবশ্যই ট্যাক্স-এর একটা উল্লেখযোগ্য পার্থক্য থাকতে হবে। এই বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছি। এনবিআর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে আমরা কিছুটা সমাধান পাব বলে আশা করি। আর একটা বিষয় হলো দ্বৈতকর। দ্বৈতকর একজন বিনিয়োগকারীকে শেয়ারবাজারে আসতে নিরুৎসাহিত করে। আর একটি বিষয় হলো পলিসি সম্পর্কিত বিষয়। তাই রেগুলেটরের সাথে আমরা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
সিইও ফোরামের প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্য প্রতিনিধিবৃন্দরা বলেন, বাজারের উন্নয়নে এর আগে আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। আমার মনে হয় সবার কাছে আমরা পৌঁছাতে পারিনি আমাদের বিষয়গুলো। অনেক আগে থেকে আমরা তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে করের ব্যাবধান বৃদ্ধি করতে বলে আসছি। কিন্তু এর কোনো প্রতিফলন আমরা দেখতে পায়নি। যদি করের ব্যবধান বাড়ানো না হয়, তাহলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে পারব না।
প্রতিনিধিবৃন্দ বলেন, এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজারের ডিভিডেন্ডের উপর আকৃষ্ট হচ্ছেন না এর অন্যতম কারণ হল দ্বৈত কর। ডিভিডেন্ডে একবার কর্পোরেট ট্যাক্স দেওয়া হচ্ছে এরপর আবার বিনিয়োগকারীদেরকে পুনরায় কর দিতে হয়। বাংলাদেশে ব্যাংক ঋণ অত্যন্ত সহজলভ্য হবার কারণে ভালো ভালো কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। এছাড়া আমাদের বাজার ইক্যুইটি কেন্দ্রিক হওয়ায় এখানে উত্থান-পতন বেশি দেখা যায়। তাই বাজারে কিভাবে পণ্য বৈচিত্র্যতা বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সূত্রঃ শেয়ারনিউজ