দেশে চীন বিনিয়োগ করেছে ৭ বিলিয়ন ডলার, ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে ২৩ বিলিয়নের

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেন। এটি বাস্তবায়ন করছে চীনের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান—গেঝুবা গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (সিজিজিসি), জিয়াংসু প্রভিন্সিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (জেটিইজি) ও ওয়েহাই ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকস অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেটিভ কোম্পানি লিমিটেড।

সাসেক সংযোগ প্রকল্প-২-এর আওতায় এডিবির অর্থায়নে এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের বিভিন্ন অংশে কাজ করেছে চায়না কনস্ট্রাকশন সেভেনথ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশন করপোরেশন লিমিটেড ও হেগো নামে চীনের দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়ক ও যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ দেশের এমন প্রকল্পে এখন তৈরি হয়েছে চীনা ঠিকাদারদের আধিপত্য।

দেশে চীনের বিনিয়োগে গৃহীত প্রকল্পগুলোয় ঠিকাদারের কাজ প্রধানত চীনা সংস্থাগুলোই পেয়ে থাকে। আবার অন্যান্য দেশের অর্থায়নে গৃহীত প্রকল্পেও দেখা যায় চীনা ঠিকাদারদের আধিপত্য। পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও মূল সেতু নির্মাণ ও নদীশাসনের কাজ করেছে দুই চীনা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পটিও বাস্তবায়ন হচ্ছে চীনা ঠিকাদারের মাধ্যমে।

দেশে চীনা ঠিকাদারদের কাজের ব্যাপ্তি এখন দেশটির মোট বিনিয়োগের কয়েকগুণে দাঁড়িয়েছে। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন উেস পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত চীনের মোট বিনিয়োগের স্থিতি প্রায় ৭-৮ বিলিয়ন ডলার। আবার বিভিন্ন প্রকল্পে চীনা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পেয়েছে কমপক্ষে ২২ বিলিয়ন ডলারের।

দেশে চীনা অর্থায়নে গৃহীত হয়েছে বেশ কয়েকটি প্রকল্প। কয়েকটির কাজ এরই মধ্যে শেষও হয়েছে। চীনা অর্থায়নে গৃহীত প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ডিপিডিসির পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ ইত্যাদি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন খাতে ঋণ ও অনুদান হিসেবে মোট ১ হাজার ৭৭ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। এর মধ্যে প্রায় ৬৪৪ কোটি ডলার ছাড় হয়েছে। অনুদান হিসেবে এসেছে খুব সামান্য। সিংহভাগই ঋণ। এসব ঋণ এসেছে মূলত গত দুই দশকে।

সরকারের পাশাপাশি দেশের বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানও চীন থেকে ঋণ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বেসরকারি খাতে এ মুহূর্তে চীনা ঋণের স্থিতি ২ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন (২৩৩ কোটি) ডলারের কিছু বেশি। এক্ষেত্রে সিংহভাগ ঋণের গন্তব্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্মীয়মাণ একটি বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৪৯ কোটি ডলার। এর মধ্যে প্রায় ১৭৬ কোটি ডলারের ঋণ অর্থায়ন হয়েছে চীনা উৎস থেকে। অর্থায়ন করছে চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ব্যাংক অব চায়না ও চায়না কনস্ট্রাকশন ব্যাংক।

মার্কিন থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠান আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (এইআই) এক হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে চীন থেকে মোট বিনিয়োগ এসেছে ৭ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন (৭০৭ কোটি) ডলারের। দেশটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পেয়েছে ২২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন (২ হাজার ২৯৪ কোটি) ডলারের।

দক্ষিণ এশিয়ায় গত কয়েক বছরে চীনের প্রভাব ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। ভারত ও ভুটান বাদে বাংলাদেশসহ এখানকার প্রায় সব দেশই চীনা অর্থায়নে একের পর এক প্রকল্প নিয়েছে। বিস্তৃত হয়েছে চীনের সফটপাওয়ার (সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রভাব বিস্তারের সক্ষমতা)। আবার এ ঋণ অর্থায়ন ও বিভিন্ন প্রকল্পে দেশটির বিভিন্ন ঠিকাদারি সংস্থার অংশগ্রহণ নিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও ভূরাজনীতির পর্যবেক্ষকদের বড় একটি অংশ নানা সময়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে তাদের ভাষ্য হলো চীনের মতো নিও ডোনার হিসেবে পরিচিত দেশগুলোর ঋণের সুদ অনেক বেশি। আবার এসব দেশের ঋণের সঙ্গে এমন অনেক শর্ত বা তথ্য থাকে যেগুলো একেবারেই অস্বচ্ছ ও অস্পষ্ট। আবার এসব দেশে চীনের বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্রকল্পে যেভাবে ঠিকাদারির কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে, সেগুলো নিয়েও স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। ফলে এসব কাজের ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা বা জবাবদিহিতার গ্যারান্টি তেমন একটা নেই।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে সাবেক এক কূটনীতিক বণিক বার্তাকে বলেন, চীনের মতো নিও ডোনার হিসেবে পরিচিত দেশগুলো ঋণ বা অর্থায়নের ক্ষেত্রে সাধারণত আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুসরণ করে না। আবার এসব দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক দরপত্র নাকি জিটুজি চুক্তি; কিসের ভিত্তিতে নানা প্রকল্পে ঠিকাদারিত্বের কাজ পায়, সেটি নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। বিষয়গুলো অনেকটাই অস্পষ্ট ও অস্বচ্ছ। এসব কারণেই মানুষ ঋণফাঁদের কথা বলে।

এইআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে চীনের ৭০৭ কোটি ডলার বিনিয়োগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে, যার পরিমাণ ৩২৭ কোটি ডলার। ধাতু (নির্মাণ সংশ্লিষ্ট) সরবরাহ খাতে দেশটির বিনিয়োগের পরিমাণ ২১৩ কোটি ডলার। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ১১০ কোটি ডলার। এছাড়া আর্থিক খাতে ১৬ কোটি ও অন্যান্য খাতে ৪১ কোটি ডলার বিনিয়োগ রয়েছে দেশটির।

বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে দেশটি ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে বিনিয়োগের তিনগুণেরও বেশি। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেই চীনা ঠিকাদারদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি জোরালো। এছাড়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোয়ও চীনা ঠিকাদারদেরই আধিপত্য দেখা যাচ্ছে। এর বাইরে প্রযুক্তি, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতের প্রকল্পেও চীনা ঠিকাদারদের জোরালো উপস্থিতি রয়েছে।

এইআইয়ের চায়না গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট ট্র্যাকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে চীনা ঠিকাদারদের কাজের ব্যাপ্তি ৯০২ কোটি ডলার। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৮১১ কোটি ডলারের কাজ পেয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো। আবাসন, কৃষি, প্রযুক্তি ও ইউটিলিটি খাতে এর পরিমাণ যথাক্রমে ২৩৬, ১২৮, ১১৩ ও ১০৪ কোটি ডলার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দিন খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘চীনের বিনিয়োগ বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফের ঋণের মতো না। যেকোনো ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মতো তাদেরও প্রধান লক্ষ্য মুনাফা। যেহেতু তাদের কোনো আদর্শগত বাধ্যবাধকতা নেই, তাই তাদের কাছে এটিই আসল। আমরা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যেটা দেখেছি, আফ্রিকার বিনিয়োগেও এর ব্যতিক্রম কিছু দেখা যায়নি। বিনিয়োগের সক্ষমতা অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে চীনের অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে অবকাঠামো বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীনের বিনিয়োগ এখনো নেতৃস্থানীয়। তাই দেশটির ওপর নির্ভরশীলতার বিকল্প নেই। কিন্তু চীনের ওপর এ নির্ভরশীলতার ঝুঁকিটা অন্যরকম, যেহেতু তাদের আদর্শগত কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, বরং মুনাফাই প্রধান লক্ষ্য। এ মুনাফার জন্য তারা যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবসময় চাপের মুখে থাকবে। আমরা আফ্রিকার বেশ কিছু দেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় দেখলাম চীনের ওপর অতিনির্ভরতা কখনো কখনো এ ধরনের চাপের আশঙ্কা তৈরি করে। বিদেশী বিনিয়োগের জন্য একক রাষ্ট্রের ওপর অতিনির্ভরতা সব সময়ই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করে।’

উচ্চাভিলাষী বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) আওতায় বিভিন্ন দেশে একের পর এক প্রকল্প-মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চীন। বিশেষ করে শ্রীলংকা ও পাকিস্তানে গত এক দশকে চীনা অর্থায়নে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। আবার দেশ দুটিতে বিপুল পরিমাণ অংকের ঠিকাদারির কাজও পেয়েছে চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা। দেশ দুটির অর্থনীতিতে চীনের সংশ্লিষ্টতা দিনে দিনে বেড়েছে। একই চিত্র দেখা গেছে আফ্রিকার দেশ মিসরের ক্ষেত্রেও। বর্তমানে তিনটি দেশই মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদদের একাংশের অভিযোগ হলো চীনা ঋণের কঠিন শর্ত অর্থনীতিতে বহিস্থ ঝুঁকির পরিমাণকে বাড়িয়ে তোলে। দেশটির বিনিয়োগ বেড়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে এ ঝুঁকির মাত্রাও বাড়তে থাকে। এ ঝুঁকির মাত্রা মোকাবেলার সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেলেই দেখা দেয় অর্থনৈতিক বিপর্যয়।

বাংলাদেশেও চীনা বিনিয়োগে বাস্তবায়িত প্রকল্পে বহিস্থ ঝুঁকির মুখে আশঙ্কা তৈরি হতে দেখা গেছে। ডলার সংকটে চলতি বছরের শুরুর দিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিপত্তি দেখা দেয়। কাঁচামাল আমদানি অব্যাহত রাখাও কঠিন হয়ে পড়ে। সে সময় সংশ্লিষ্টদের অনেকেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করতে থাকেন। যদিও শেষ পর্যন্ত এ বিপত্তি এড়াতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কোনো কোনো অধ্যাপক দেশের অর্থনীতিতে চীনের উপস্থিতিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ হেল কাফী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ঢাকার প্রথম বড় ব্রিজ চীন করেছিল। এত বড় প্রকল্প হাতে নেয়ার সাহস তখন ছিল না। অথচ এখন পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্পের সাহস আমরা দেখিয়েছি। তখন ব্রিজ না হলে এ সাহস আমাদের হতো না।’

দেশে এফডিআইয়ের উৎস হিসেবে চীনের অবস্থান এখন চতুর্থ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে চীনা এফডিআইয়ের পরিমাণ প্রায় ১৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগের উন্নয়নে গঠন করা হয়েছে চীন-বাংলাদেশ সিল্ক রোড ফোরাম। চীনা বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশটির ঠিকাদারদের আধিপত্য বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য কোনো ঝুঁকি তৈরি করবে না বলে মনে করছে সংস্থাটি। বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া এখন বাংলাদেশ-চায়না সিল্ক রোড ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।

বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘কনফিউশন তৈরি করার জন্যই এ ধরনের গল্প তৈরি করা হয়। মূল বিষয়টা হলো চীন আমাদের সার-কারখানাসহ ভারী শিল্পে সাহায্য করে থাকে। একই সঙ্গে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে সাহায্য করেছে। যোগাযোগ উন্নয়নসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নেও তারা সহায়তা করেছে। পদ্মা সেতুতে তারা প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করেছে। সে সময় বিশ্বব্যাংকও সহযোগিতা করেনি। চীন এগিয়ে এসেছে বলেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে এটি করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেকেই বিভিন্ন গল্প তৈরি করছে, কারণ তারা চায় আমাদের ভারী শিল্পে চীনের বিনিয়োগ যাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। যেমন ভারত বলে চীনের ঋণ হলো ফাঁদ। কিন্তু শ্রীলংকার বেলায় দেখা যায় ৫০ শতাংশের বেশি ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ। চীনের সব মিলিয়ে হবে ১০ শতাংশ। তারা দোষ দিচ্ছে চীনের। আবার বাংলাদেশের বেলায় দেখা যায় চীনের সহযোগিতায় স্বাবলম্বী হওয়ার বিষয়টিকে বিভ্রান্তির আবর্তে ফেলার জন্য এ ধরনের গল্প তৈরি করা হচ্ছে। যাতে করে মানুষের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয় যে চীন ১ টাকা দিয়ে ৩ টাকা নেয়। এটি আমাদের অর্থনীতিতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। যেখানে বিশ্বব্যাংকের কোনো রেকর্ড নেই যে তাদের অর্থায়নে কেউ স্বাবলম্বী হয়েছে। সেখানে চীনের অর্থায়নে আফ্রিকা ও এশিয়ার অনেক দেশ স্বাবলম্বী হয়েছে। কিন্তু কেউ যদি ঋণ করে সে টাকা খেয়ে ফেলে তাহলে কিছু করার থাকবে না। কোনো কোনো দেশের শাসক ঋণের টাকা আত্মসাৎ করেছে। ফলে এটাকে ঋণের ত্রুটি বলা যায় না। এখানে ত্রুটিটা ঋণদাতার নয়, গ্রহীতার।’

Source: Bonik Barta

Shopping Basket